#লন্ডন: আমাদের খাওয়াদাওয়ার ধরন এবং রকম, দুটোই নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের উপরে। তার সঙ্গে যুক্ত হয় ব্যক্তিগত পছন্দ আর অপছন্দ। কেউ ঘোর নিরামিষাশী, আবার কেউ মাংসাশী হন। অনেকে আবার এই দুটোর মেলবন্ধনে বিশ্বাস করেন। একটি গবেষণায় এই নিয়ে উঠে এল কিছু এমন তথ্য যা আমাদের অনেকেরই এত দিন জানা ছিল না। এই গবেষণা বলছে যে যাঁরা ১০০% নিরামিষ খাবার খান, তাঁদের হাড়ের সমস্যা বেশি এবং হাড় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কাও অনেক বেশি। অক্সফোর্ড ও ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় যৌথ ভাবে এই গবেষণা চালিয়েছিল। এর জন্য তারা প্রায় ৫৫ হাজার মানুষের উপরে একটি সমীক্ষা করেছিল। সমীক্ষার গভীরে প্রবেশ না করেও এটুকু সহজেই বোঝা যায় যে যাঁরা শুধুই নিরামিষ খান তাঁদের শরীরে অনেক কিছুর ঘাটতি দেখা যায়। যার ফলস্বরূপ তাঁদের অস্থি বা হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। তবে এমন কথা চট করে বলা যায় না, এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে তাই এই সমীক্ষায় পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল যে কী ভাবে নিরামিষ ও আমিষ ডায়েট শরীরে তার প্রভাব বিস্তার করছে। দেখা গিয়েছে যে যাঁরা নিরামিষ খান এবং যাঁরা ভেগান অর্থাৎ যাঁরা পশুজাত কোনও খাবারই খান না তাঁদের কবজি, হিপ, গোড়ালি, পা ইত্যাদি জায়গায় বেশি ফ্র্যাকচার হয়েছে বা চিড় ধরেছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাফিল্ড ডিপার্টমেন্ট অফ পপুলেশন হেল্থ বিভাগের নিউট্রিশনাল এপিডেমিওলজিস্ট ডক্টর ট্যামি টং বলেছেন যে এ রকম হওয়ার কারণ হল ক্যালসিয়াম আর প্রোটিনের অভাব। বিশেষ করে ভেগানদের শরীরে এই দুই উপাদানই এত কম মাত্রায় থাকে যে তাঁদের হাড় ভঙ্গুর হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। কিন্তু এই গবেষণায় এখনও একটি মস্ত বড় ফাঁক থেকে যাচ্ছে। গবেষকরা বুঝতে পারছেন না যে কোন ফ্র্যাকচার পড়ে গিয়ে হয়েছে আর কোনটা দুর্ঘটনা থেকে হয়েছে। তা ছাড়া আরও একটি বিষয় মাথায় না রাখলেই নয়- সম্পূর্ণ গবেষণাই করা হয়েছে সাদা চামড়ার ইউরোপিয়ানদের উপর। তাই অন্যান্য জাতির ক্ষেত্রে হাড়ে উপস্থিত খনিজের ঘনত্ব এবং হাড় ভাঙার প্রবণতা কতটা সেটা বোঝা যাচ্ছে না! তাই অনেকেই পরামর্শ দিয়েছেন যে এই গবেষণা বিভিন্ন অঞ্চল ও জাতিভিত্তিক ভাবে করতে এবং মহিলা ও পুরুষদের আলাদা সমীক্ষা করে তবেই সিদ্ধানে উপনীত হতে!